থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট-এর অ্যাডমিন আটকের ঘটনায় সংগঠনের বিবৃতি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :


থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট-এর মোহাম্মদ ওসমান গণিকে মাদকদ্রব্যসহ আটকের ঘটনায় তাকে অ্যাডমিন পদ থেকে অপসারণ ও তার সাধারণ সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাডমিন প্যানেল। এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর তাকে মাদকদ্রব্যসহ আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অ্যাডমিন প্যানেলের বিবৃতি –

যখন প্রিয় এলাকাটি (উখিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থাইংখালী) তীব্র গতিতে গ্রাস করছিল মাদক, যখন এলাকার প্রায় প্রতিটি ঘরে মাদক বিক্রেতা, পাচারকারী, সেবনকারী দিনদিন বাড়ছিল, ঠিক তখনই যুবসমাজকে মাদকমুক্ত ও উঠতি তরুণদের মাদক থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে মানবতার কাজে সাড়া দিতে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয় একদল তরুণ “থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট” নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠন করে।

কিন্তু ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে মুখোমুখি হতে হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে। যা সত্যিই প্রত্যাশার বাইরে ছিল। উক্ত ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি।

ওসমান গণি সংগঠনের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অ্যাডমিন হলেও আমরা সবাই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করি। তেমনি আট-দশ জন স্বেচ্ছাসেবীর মতোই ওসমান গণি থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট-এর হয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নিয়ে কাজ করেছেন। সে সুবাদে প্রতিষ্ঠা লগ্নে নিজের এলাকায় (থাইংখালী) একটি সামাজিক সংগঠন (থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট) গঠন করার সিদ্ধান্ত নিলে ওসমান গণিও আমাদের সঙ্গী হয়।

কারণ এ সমাজে আমরা একটা কথা সচারাচর শুনি মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে শিক্ষিত সমাজের ভূমিকা দরকার। এদিক থেকে “থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট” ওসমান গণিকে অ্যাডমিন হিসেবে বাছাই করা ভুল ছিল না। কারণ তিনি তখনও অপরাধমুক্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি অনার্স পড়ুয়া একজন ব্যক্তি। এছাড়াও ইতিপূর্বে ওসমান গণির নামে মাদকদ্রব্য মামলা কিংবা মাদক কারবারে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ ছিল না।

থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট একটি অলাভজনক ও মানবতার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এখানে আমাদের কারও পেশাদারিত্ব নেই। এটা দিয়ে কেউ ঘর-সংসার চালায় না। বরং আট-দশটি সামাজিক সংগঠনের মতোই আমরা ব্যক্তিজীবনের বাইরে গিয়ে এটিতে সময় দিই এবং মানুষের জন্য কাজ করি।

ওসমান গণির থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট-এর পদ ছাড়াও আরও বহু সাংগঠনিক পদবী রয়েছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু মানুষ থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট-এর পদবীটাই হাইলাইটস করেছে। ফলে আমরা কষ্ট পেয়েছি। কারণ আমরা এখানে কেউই লাভজনক চিন্তা নিয়ে এ সংগঠন করিনি। শুধুমাত্র মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এখানে কাজ করি। অথচ আমরা কারও কাছে এধরনের প্রচার প্রত্যাশা করিনি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মানুষ এটিকে ভিন্নভাবে তোলে ধরার পায়তারা করছে। অনেক মানুষ খোঁচা দিচ্ছে।

এ ঘটনায় হয়তো আমরা একটি ধাক্কা খেয়েছি। হয়তো প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছি। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের জন্য কাজ করে যাব। যতটুকু সম্ভব হয়।

কিন্তু ব্যক্তি ওসমান গণির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়ভার একচেটিয়া “থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট” নেবে না। যেখানে আমরা মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই সংগঠন গড়ে তুলেছি, সেখানে আমাদেরই একজন গুরুত্বপূর্ণ পদধারী ব্যক্তি এমন কাজে লিপ্ত হবে সেটা আমাদের ধারণার একদম বাইরে ছিল। আজ থেকে আমরা আরও সাবধান হবো।

পরিশেষে বলবো, আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করুন। খোঁচা নয় উৎসাহ দিন, গঠনমূলক সমালোচনা করুন। হয়তো একদিন সত্যিই আমরা মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে কিঞ্চিৎ পরিমাণ হলেও ভূমিকা রাখতে পারবো।

বিনীত,
অ্যাডমিন প্যানেল, থাইংখালী ব্লাড ডোনার’স ইউনিট।